Time is money

Thursday, April 30, 2015

যেভাবে ফাঁসি কার্যকর করা হয় বাংলাদেশে

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের ফাঁসি কার্যকরে রয়েছে কিছু আনুষ্ঠানিকতা ও প্রক্রিয়া। এগুলো ধাপে ধাপে সম্পন্ন করার পরই আসামীর দণ্ড কার্যকর হয়। সাধারণত, একজন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী যতই ঘৃণ্য হোক না কেন, তার শেষ ইচ্ছা পূরণ এবং মৃত্যু যথাসম্ভব আরামদায়ক করার চেষ্টা করা হয়।

আইনগত সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফাঁসির আসামীকে নিয়ে আসা হয় কনডেম সেলে। সেখানে শুধু ফাঁসির আসামীরাই থাকে। মাথায় থাকে লাল টুপি। তার সাথে যথাসম্ভব ভালো ব্যবহার করা হয়।

কনডেম সেলে আসামীর আত্মীয়- স্বজনদের সাথে দেখা করানো হয়। তবে কখন ফাঁসি কার্যকর হবে তা আসামী এবং আত্মীয়-স্বজন কাউকেই বুঝতে দেয়া হয় না। ফাঁসির দড়ি বিদেশ থেকে আনা হয়। এ দড়ি ম্যানিলা রোপ নামে পরিচিত। নিয়ম করে কয়েকবার এতে মাখানো হয় সবরি কলা আর মাখন।

জল্লাদ নির্বাচন করা হয় কয়েদিদের মধ্য থেকেই। প্রতিটি ফাঁসি কার্যকরের জন্য ঐ কয়েদির ২ মাস করে সাজা কমে। কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আসামীর সম- ওজনের বালির বস্তা দিয়ে কয়েকবার ফাঁসির ট্রায়াল দেয়া হয় কয়েকদিন আগে থেকেই।

ফাঁসি কার্যকরের কয়েক ঘণ্টা আগে আসামীকে গোসল ও ইচ্ছানুযায়ী খাবার
দেওয়া হয়। তারপর ধর্মীয় আচার মোতাবেক ক্ষমা চাওয়ানো হয়। কনডেম সেলে এসব আচার পালনের পরই আসামী বুঝতে পারেন, আজই তার জীবনের শেষ রাত।
কিছুক্ষণ পর আসামীকে ফাঁসির মঞ্চে ওঠানোর পর কালো রঙের যম টুপি ও গলায় দড়ি পরিয়ে দেয়া হয়।

জেল সুপার হাতে রুমাল নিয়ে মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। সাথে থাকেন সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকজন। জল্লাদের চোখ থাকে রুমালের দিকে। জেল সুপার হাত থেকে রুমাল ফেললেই জল্লাদ ফাঁসির দড়িতে টান দেন। এতে আসামীর পায়ের নিচ থেকে পাটাতন সরে যায়।

গলায় আটকে যায় মোটা দড়ি। ১০ মিনিট কিংবা অবস্থাভেদে তারও বেশি সময় ঝুলিয়ে রাখার পর একজন ডাক্তার এসে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

তারপর মৃতদেহ ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো অবস্থা থেকে নামিয়ে এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

No comments: